Video Of Day

পুজোয় সুরক্ষা নিয়ে ব্যাঙ্ক-লালবাজার বৈঠক

টানা প্রায় ১২ ঘণ্টা ব্যাঙ্কে থেকে ধীরেসুস্থে ভল্ট কেটে সেখানে রাখা প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার পুরোটাই সাফ করে দিয়েছিল চোর। গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বর, ষষ্ঠীর রাতে জানলার গ্রিল কেটে ধর্মতলার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ঢুকে বাংলাদেশ থেকে আসা মাত্র এক জন দুষ্কৃতী ওই কাণ্ড ঘটিয়েছিল। সে বার সপ্তমী থেকে টানা ছ’দিন বন্ধ ছিল ব্যাঙ্ক। গত বছরের ওই ঘটনার কথা মাথায় রেখে এ বার পুজোর চার দিনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা কী ভাবে নেওয়া যেতে পারে, সেই ব্যাপারে চলতি সপ্তাহে শহরের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের সঙ্গে বৈঠকে বসছে লালবাজার। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, গোয়েন্দা বিভাগের ডাকাতি ও রাহাজানি দমন শাখা ওই বৈঠক ডাকছে, সেখানে অ্যান্টি বার্গলারি বা সিঁধেল চুরি দমন শাখার গোয়েন্দারাও থাকবেন।

এ বার ষষ্ঠী অর্থাৎ ১৫ অক্টোবর কাজ হয়ে ব্যাঙ্কে ছুটি পড়বে। সে দিন সোমবার। সপ্তমী থেকে দশমী, মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার টানা চার দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে। খুলবে আবার ২০ তারিখ, শনিবার। মাসের তৃতীয় শনিবার বলে ব্যাঙ্ক সে দিন খোলা। সে কথা মাথায় রেখে ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বন্ধ করার সময়ে সব ব্যাঙ্কেরই বিভিন্ন শাখায় ভালো অঙ্কের নগদ জমা থাকার কথা। যাতে চার দিন ছুটির পর সকাল সকাল গ্রাহকেরা গিয়ে সমস্যায় না পড়েন। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, টানা চার দিন ছুটি বলে ব্যাঙ্ক ওই ক’দিন সমস্ত নজরদারি উঠিয়ে দেবে, এমনটা করলে বিপদ ঘটতে পারে। পুজোর ক’দিন রোজ অন্তত এক বার ব্যাঙ্কে ঢুকে সব ঠিক আছে কি না, সেটা ব্যাঙ্ক কতৃর্পক্ষের তরফে দেখে নেওয়া হলে সমস্যার অনেকটা সুরাহা হতে পারে বলে লালবাজার মনে করছে। সেই সঙ্গে স্থানীয় থানার পুলিশ ও লালবাজারের গোয়েন্দারাও বাইরে থেকে ব্যাঙ্কে ঢোকার সমস্ত জানলা-দরজা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।

আসলে গত বছর ব্যাঙ্কের ভল্ট এক জন চোরের সাফ করে দেওয়ার ঘটনা এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে গোয়েন্দা অফিসারদের একাংশকে। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘গত বারের ওই ঘটনার কথা মাথায় রেখে পুজোর ক’টা দিন ব্যাঙ্কগুলির সুরক্ষা ঠিক কী ভাবে নিশ্চিত করা যাবে, সেটা আমাদের কাছেও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে আরও কিছু পথ বেরিয়ে আসতে পারে বলে আমরা মনে করছি। তাঁদের কাছ থেকে কিছু মূল্যবান পরামর্শও পাওয়া যেতে পারে।’ এমনিতে কাজের দিনে সকাল থেকে সন্ধে ব্যাঙ্ক ও এটিএমগুলির নিরাপত্তার দিকে নজর রাখেন ডাকাতি ও রাহাজানি দমন শাখার গোয়েন্দারা। রাতভর সেই নজরদারি চালায় অ্যান্টি বার্গলারি শাখা। কিন্তু পুজোয় গোয়েন্দা বিভাগের অফিসার ও কর্মীদের একটা বড় অংশ নিরাপত্তা ও ভিড় সামলানোর দায়িত্বে নিযুক্ত হন। সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলিও সাবধান হোক এবং সতর্কতামূলক কিছু পদক্ষেপ নিজেরা করুক, সেই আশা করছে পুলিশ। 

একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের যোধপুর পার্ক শাখার এক আধিকারিক স্বীকার করে নিচ্ছেন, ‘বড় কোনও শাখা বা জোনাল অফিস ছাড়া অন্যান্য শাখায় সাধারণত পুজোর দিনগুলিতে ব্যাঙ্কের সদর ফটক খুলে সব ঠিকঠাক আছে কি না, সেটা দেখা হয় না। যদিও এক জন নিরাপত্তাকর্মীকে নিয়ে রোজ এক বার এটা করে দেখলে ভালো হয়।’ তাঁর বক্তব্য, শুধু সদর ফটক নয়, ব্যাঙ্কে ঢোকার সমস্ত জানলাও ঠিক আছে কি না, সেটা পরীক্ষা করা দরকার।গত বছর ধর্মতলার ওই ব্যাঙ্কে চোর ঢুকেছিল দোতলার এমন একটি জানলার গ্রিল কেটে, যেটা ঝট করে বাইরে থেকে দেখে বোঝা সম্ভব নয়। 

No comments

Post a Comment

Home